★ স্বামী-স্ত্রী মিলে মিশে কর ভালবাসা উভয়ের জীবন হবে সকল শান্তির আশা।

স্বামী-স্ত্রী মিলে মিশে কর ভালবাসা  উভয়ের জীবন হবে সকল শান্তির আশা
Add caption
স্বামী-স্ত্রীর প্রেমই প্ৰকৃত প্রেম। বিবাহের আগে মনের আবেগে যে রোমান্টিক প্রেম হয়,
তা শুধু মাত্র রঙ্গীন স্বপ্ন। তবে ঐ স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয় খুবই কম। স্ত্রী যদি তার স্বামীর
সঙ্গে প্রেম ভালবাসার ব্যবহার করে, স্বামীর কথা মান্য করে, প্রতিটি কাজে স্বামীর
পরামর্শ নিয়ে কাজ করে, স্বামীর প্রতিটি আদেশ দাসিনীর মত পালন করে, তাহলে ঐ
স্ত্রী আপন স্বামীকে মজনুর মত করে বানিয়ে নিতে পারে। স্বামীকে গোলাম অথবা
মনিব উভয় দিকে ব্যবহার করিতে পারে। স্ত্রী যদি স্বামীর সেবিকা হয়ে যায়, তাহলে
স্বামীও স্ত্রীর সেবক হতে বাধ্য থাকিবে। কিন্তু প্রথম প্রথম গৃহ বধূকে অনেক অনেক


কষ্ট শিকার করতে হবে, অনেক ধৈৰ্য্য ধারণ করতে হবে। অনেক কথা মেনে নিতে
হবে, অনেক অধিকার ত্যাগ করতে হবে। কারণঃ No Pains, no ganis অর্থাৎ
কষ্ট ছাড়া কেষ্ট মিলে না।স্বামী স্ত্রীর প্রকৃত প্রেম ভালবাসার অভিনয় রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
এর মেয়ে আদরের কলিজার টুকরা । হযরত যয়নাব (রাঃ) নিজ মা জননী নবীর
হযরত খাদিজা (রাঃ) এর থেকে, যে সমস্ত গুণাগুণ ও আদর্শ শিক্ষা লাভ করেছিলেন,
তার মাধ্যমে তিনি তার আপন স্বামীকে বন্ধুরূপে সুখে-দুখে সাথী রূপে, বিপদাপদে,
জীবন সঙ্গী হিসেবে বানিয়ে নিয়েছিলেন।

আরবের কোরাইশরা যখন তার স্বামী আবুল আসকে কাফেররা বলেছিল, তোমার
স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দাও। অতঃপর কোরাইশদের মধ্যে থেকে যে তরুনীকে তুমি।
বিবাহ করতে চাও, তার সাথেই তোমার বিবাহের ব্যবস্থা আমরা করে দিব।
(নাউযুবিল্লাহ) মুহাম্মদ (সাঃ) এর নিজগৃহে রেখোনা। কিন্তু আবুল আ'স
কন্যাকে
(তখনও মুসলমান হয়নি) বললঃ কখনও তা হতে পারে না। আল্লাহ তা’আলার শপথ।
আমি নবী (সাঃ) এর কন্যাকে ত্যাগ করতে পারিব না এবং আমি এটা পছন্দও করিনা।
যে, আমার স্ত্রী যয়নাবের বিনিময়ে অন্য কোন কুরাইশ নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহন করি,
তা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।

স্ত্রী স্বামীর আনুগত্য করে দিয়ে স্বামীর ।
প্রেম-ভালবাসা অন্তরে কেমন শক্ত মজবুত স্থান
তৈরি , কুরাইশ লোকেরা শত পীড়া
করেছেন যেগোত্রের স্ত্রীকে তালাক দেয়ার জন্য
পীড়ি ও সৃষ্টি সত্ত্বেও, সুন্দরী তরুনীকে বিবাহ প্রস্তুত সত্ত্বেও আবুল
চাপ দিতে থাকা
আস উত্তরে বলেছেনবিনে নারী নহেঅন্য
, যয়নাব” অন্য যোগ্য । যয়নাবের সাথে
নারীর তুলনাই হতে পারে না। আমি যয়নাবের বিনিময়ে অন্য কোন নারী গ্রহন করতে
পারব না।

বনী উযরাহ গোত্রের এক যুবকের সাথে পরমা সুন্দরীর বিবাহ হয়। বিবাহের পর স্বামী।
গরীব হওয়াতে পিতা তার কন্যাকে স্বামীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে। স্বামী
বিচারক মারওয়ানের নিকট বিচার দিলে, মারওয়ান মেয়েকে দেখে এতই পছন্দ হল
যে, সে যে বিচারক তা সে ভুলে গেল। সে মেয়ের পিতাকে রাজি করে কিছু ধন-দৌলত
দিয়ে স্বামী থেকেজোর করে তালাক নিয়ে ইদ্দতের পর মেয়েকে বিবাহ করে নিল।
স্বামী বেচারা স্ত্রীর দেওয়ানা ছিল। সে ন্যায় বিচারের জন্য বড় বিচারকের নিকট গেল।
কিন্তু দ্বিতীয় বড় বিচারক সুন্দরী মেয়েকে দেখে সেও পাগল হয়ে গিয়ে যুবককে
উদ্দেশ্য করে বলল-আমি যদি বিয়ে করি তাহলে তোমার আপত্তি আছে কি? যুবক
সরাসরি কিছু না বলে বলল-শপথ মহান সৃষ্টিকর্তার!আমি স্ত্রীর প্রেম ভালবাসার সাথী ।
মৃত্যুকালেও হারাতে পারবনা, কবরের গভীরে প্রবেশ না করা পর্যন্ত ভুলে যেতে পারব
না। প্রাণ প্রিয় স্ত্রীর বিচ্ছেদ ব্যথায় অন্তরে রয়েছে মোর বিরহ প্রেমের যন্ত্রনাআর
হৃদয়ের বাঁশিতে বাজে করুন যন্ত্ৰনার সুর। আমি এখন ভিক্ষা চাই কেবল মহান প্রভুর
করুনাযদি আমি এ স্ত্রীকে অবহেলা করি কিন্তু এর প্রকৃত মুহাব্বত ও অনুগত্যের শুকরিয়া আদায় করে শেষ করতে পারব না।
অতঃপর বিচারক স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করল, এ ব্যাপারে তোমারকি মতামত । বিচারক
বললঃ তুমি কি আমার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাও? বিনিময়ে তুমি পাবে ইজ্জত,
সম্মান, মর্যাদাবিশাল মনোরম ।
, বিশাল সুরম্য অট্টালিকা, শয়নকক্ষ, ফুলে ভরা
বাগান, ফলে ভরা গাছ আর পাবে সোনা-গহনা সহ অনেক ধন সম্পদ।
নাকি তুমি আমার আগের মারওয়ানের নিকট যেত চাও? যে ব্যক্তি তোমার পিতার
সাথে গভীর চক্রান্তের মাধ্যমে তোমার পূর্বের স্বামীর উপর জুলুম করেছে। কি বল?
নাকি সেই পূর্বের গ্রাম্য স্বামীর নিকট যেতে চাও, যে দুঃখ কষ্ট, দরিদ্রতাঅনাহারে
কুড়ের ঘরে তোমাকে মাঝে দিন কাটাতে হয়েছে। নিকট
কষ্টের পুনরায় তার ফিরে।
যাবে কি না? অন্য কারো নিকট যাবে?

বিচারকের প্রশ্নের উত্তরে মেয়েটি এই বললঃ আমি আমার গ্রাম্য স্বামীকে নিজ জীবন
অপেক্ষায় অধিক ভালবাসি। আমি শুধু তাকেই চাই। সে দরিদ্র বা নিঃস্ব এবং
যদিও
কুড়ের ঘরে বসবাস করে। কিন্তু আমাকে এত আদর সোহাগ ও ভালবাসা দিয়েছে।
এবং এমন অমায়িক ব্যবহার উপহার দিয়েছেন যে, আমার দৃষ্টিতে আত্মীয় স্বজন,
পরিবার-পরিজন, বা বান্ধবীর তুলনায় সর্বক্ষেত্রে প্রিয় ব্যক্তি ঐ গ্রাম্য লোকটি। রইল
বিচারক ও মারওয়ানের কথা। তাদের কেউ হয়তো আমাকে স্বর্ণ দিয়ে ভরে দিবে আর
কেউ হয়তো হিরা মুক্তা দিয়ে ভরে দিবে। কিন্তু এই গ্রাম্য লোকটির নিকট থেকে যে
প্রেম-ভালবাসাআদর-সোহাগা, মায়া-মমতা পেয়েছি এবং সে সাহায্য সহযোগিতা
= ত্যাগ-তিতিক্ষা, শান্তনা ধৈর্য্য এবং স্ত্রীর মনের মত যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা অন্য
কারো দ্বারা অসম্ভব। হীরা মুক্তাস্বর্ণ, রূপা এর চেয়ে বেশি ভাল আমার স্বামীর কাছে
এক টুকরা রুটি খেয়ে থাকাটা। আপনি যদি আমাকে পূর্বের স্বামীর নিকট ফিরিয়ে
দেন, তাহলে এটাই আপনার কার্য্যকে সম্মানিত করে আপনাকে তুলবে।

প্রিয় পাঠক /পাঠিকাবৃন্দ!
সুন্দরী মেয়েটির আবেগ খানার উত্তরটি হয়ত আপনাদের
ভাল লেগেছে। আল্লাহ তাআলা যেন প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রীর মাঝে এমন মিল-মুহাব্বন্ত,
এমন প্রেম করেন অপরের জন্য জীবন :
ভালবাসা দান , যাতে করে একে উৎসর্গকারী
বানিয়ে দেন এবং একে অপরকে ধর্মীয় কাজ-কর্মে উৎসাহ দান কারী বানিয়ে দেন। (আমিন)

No comments

Powered by Blogger.